আলোর মনি ডটকম ডেস্ক রিপোর্ট: যৌতুক মামলায় পুলিশের হাতে গ্রেফতার আদিতমারী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য সহকারী ভবেশ চন্দ্র রায়কে (৩২) আজ বৃহস্পতিবার ২৭ আগস্ট বিকালে লালমনিরহাট আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। গতকাল বুধবার ২৬ আগস্ট সন্ধ্যায় আদিতমারী থানার এসআই আবু বক্কর সিদ্দিক একই উপজেলার ভেলাবাড়ী ইউনিয়নের ভেলাবাড়ী বাজারে হানা দিয়ে তাকে গ্রেফতার করে।
স্বাস্থ্যকর্মী ভবেশ চন্দ্র রায় লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার পলাশী ইউনিয়নের বড়াইবাড়ী এলাকার নিরঞ্জন কুমার রায়ের ছেলে। ভবেশ চন্দ্র রায় একই এলাকার জগদীশ চন্দ্র রায়ের মেয়ে বিথী রানী রায়কে (২৯) ভালোবেসে ২০০৯ সালের ২৪ আগস্ট বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। তারে সংসার জীবনে ধৃতিস্মিতা রায় উষ্ণতা (৪) নামে এক কন্যা সন্তান রয়েছে।
আদিতমারী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্র জানায়, স্বাস্থ্য সহকারী ভবেশ চন্দ্র রায় উত্তম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অধীনে কমলাবাড়ী ইউনিয়নের ব্রাম্মণেরবাসা কমিউনিটি ক্লিনিকে স্বাস্থ্য সহকারী হিসেবে কর্মরত।
লালমনিরহাট কোর্ট থানার ওসি জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আজ বৃহস্পতিবার ২৭ আগস্ট দুপুরে লালমনিরহাট অতিরিক্ত চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে ভবেশ চন্দ্র রায়কে সোপর্দ করা হলে বিজ্ঞ আদালত তার জামিন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। ওই আসামীকে লালমনিরহাট কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
আদিতমারী থানা পুলিশ ও মামলার বিবরণে জানা যায়, বাপের বাড়ী থেকে যৌতুকের আড়াই লক্ষ টাকা আনতে অস্বীকৃতি জানালে স্বামী ভবেশ চন্দ্র রায় সহ তার শ্বশুর বাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে মারপিটের অভিযোগ এনে গত ১৬ আগস্ট আদিতমারী থানায় ২০০০ সালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন(সংশোধনী-২০০৩) এর ১১(গ)/০৩ ধারায় একটি মামলা রুজু করে ভবেশের স্ত্রী বিথী রাণী রায়। ওই মামলায় আদিতমারী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আবু বক্কর সিদ্দিক গতকাল বুধবার ২৬ আগস্ট সন্ধ্যায় আদিতমারী উপজেলার ভেলাবাড়ী ইউনিয়নের ভেলাবাড়ী বাজার থেকে ভবেশ চন্দ্র রায়কে গ্রেফতার করে। ভবেশ চন্দ্র রায় লালমনিরহাট সদর ১০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে কর্মরত শুকো রাণী রায় নামে এক নার্সকে ভাগিয়ে এনে দ্বিতীয় স্ত্রী হিসেবে বিয়ে করেছেন বলে জানা গেছে। ওই নার্স আদিতমারী উপজেলার সাপ্টিবাড়ী ডিগ্রি কলেজের এক প্রভাষকের স্ত্রী। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই প্রভাষক তার স্ত্রী শুকো রাণী রায়কে ভবেশ চন্দ্র রায় ভাগিয়ে নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে নিশ্চিত করেছেন।
মামলার বাদী বিথী রাণী রায় বলেন, গত ১১ আগস্ট সন্ধ্যায় আমাকে ভবেশ চন্দ্র রায়, তার বড় ভাই মাদক মামলার আসামী শ্যামল কুমার রায় ও শুকো রাণী রায় (অনামিকা) আমাকে মারপিট করে বাড়ী থেকে বেড় করে দেয়। পরে আদিতমারী হাসপাতালে ভর্তি হই। এর আগেও আমার বাপের বাড়ী থেকে ২লক্ষ ৫০হাজার টাকা যৌতুক এনে না দেওয়ায় নির্যাতন করে আসছিল। ১২ আগস্ট আদিতমারী হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পাওয়ার পর থানার মামলা রুজু করি। এখন আদালতে ন্যায্য বিচার বিচার চাই।
আদিতমারী থানার অফিসার ইনচার্জ সাইফুল ইসলাম বলেন, বিথী রাণী রায়ের যৌতুক মামলায় প্রধান আসামী ভবেশ চন্দ্র রায়কে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। অপর দুই আসামীকেও গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।